সামরিক র‌্যাংকিংয়ে রাতারাতি উন্নতি ঘটেছে পাকিস্তানের। মাত্র ২ বছরের ব্যবধানে বিশ্বে  ১৫তম স্থান থেকে নবম স্থানে উন্নীত হয়েছে পাকিস্তান আর্মি। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ২০২০ এর তথ্য অনুসারে বিশ্বের ১৩৮টি দেশের মধ্যে সামরিক দিক দিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান ছিল ১৫তম। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে বিশ্বে ১৪০ টি দেশের মধ্যে পাকিস্তান আর্মির অবস্থান দাড়ায় নবম। 

সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি ছাড়া পাকিস্তান আর্মি, নেভি, বিমান বাহিনীসহ  সব শাখায় গত ২ বছরে যুক্ত হয়েছে নতুন আর শক্তিশালী অনেক সমরাস্ত্র। উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে সামরিক বিমান, ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যানের সংখ্যা। পাকিস্তান নেভিতে যুক্ত হয়েছে শক্তিশালী দুটি ডেস্ট্রয়ারসহ, সাবমেরিন ও  টহল জাহাজ।

 
মাত্র ২ বছরের ব্যবধানে পাকিস্তান আর্মির সৈন্য সংখ্যা বেড়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার।  গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ২০২০ সালের মে মাসের তথ্য অনুসারে পাকিস্তনের মোট সেনা সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৪ হাজার। ২০২২ সালে জানুয়ারি মাসে পাকিস্তান আর্মির সেনা সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার। এর মধ্যে সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ৬ লাখ ৪০ হাজার। প্যারামিলিটারি ৫ লাখ এবং রিজার্ভ সৈন্য সংখ্যাও ৫ লাখ। 
সেনা সংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বে বর্তমানে পাকিস্তান আর্মির অবস্থান ষষ্ঠ এবং মুসলিম বিশ্বে প্রথম। 

তবে সামরিক র‌্যাংকিংয়ে বিশ্বে ভারতের স্থান অপরিবর্তিত রয়েছে অনেক বছর ধরে। বিশ্বে সামরিক শক্তিতে ভারতের অবস্থান বর্তমানে চতুর্থ। ভারতীয় আর্মির সেনা সংখ্যাও তেমন বাড়েনি গত এক বছরে।  গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার অনুসারে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত ভারতীয় আর্মির মোট সৈন্য সংখ্যা ৫১ লাখ ২৭ হাজার। এর মধ্যে সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১৪ লাখ ৪৫ হাজার। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতীয় আর্মির মোট সেনা সংখ্যা ৫১ লাখ ৩২ হাজার। সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১৪ লাখ ৫০ হাজার। 

পাকিস্তান হলো মুসলিম বিশ্বের একমাত্র দেশ যার কাছে  রয়েছে পারমানবিক বোমা। আর এ বোমা দেশটিকে শত্রুর বিরুদ্ধে টিকে থাকার শক্তি যুগিয়েছে। পারমানবিক বোমা ছাড়াও দেশটির রয়েছে নিজস্ব তৈরি বিভিন্ন ধরনের শক্তিশালী মিসাইল, যুদ্ধবিমান, রণতরী আর ট্যাঙ্কসহ আধুনিক সমরাস্ত্র। দেশটি নিজেদের প্রয়োজনীয় অনেক আধুনিক সমরাস্ত্র তৈরি করে। বেশ কিছু সমরাস্ত্র রপ্তানিও করে থাকে। 

পাকিস্তান আর্মির প্রায় ৭০ ভাগ সৈন্য ভারত সীমান্তে নিয়োজিত। সামরিক খাতে দেশটির বাৎসরিক ব্যয় ৮  বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে পাকিস্তানের সামরিক ব্যয় ৬ দশমিক ২ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে পাকিস্তানের সামরিক বাজেট ৮ দশমিক সাত আট বিলিয়ন ইউএস ডলার। পাকিস্তানের মোট জাতীয় বাজেটের ১৮ ভাগের বেশি সামরিক খাতে ব্যয় করা হয়ে থাকে। 

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তান বেশ কয়েকবার প্রতিবেশী ভারতের সাথে যুদ্ধে  লিপ্ত হয়েছে। অর্থনৈতিক ভাবে প্রকট সমস্যায় থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তান সামরিক খাতের আধুনিকায়নে বিপুল বরাদ্দ দিয়ে চলছে। পাকিস্তানের সামরিক অবস্থান নিয়ে  নিউজ উইকের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, দেশটি বিশ্বের অন্যতম একটি সামরিক শক্তি এবং  দক্ষিন এশিয়ায় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।   

নিউজ উইকের বিশ্লেষণে আরো বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী মূলত প্রতিরক্ষামূলক।  বিদেশী আগ্রাসন মোকাবেলা করে বড় ধরণের কোনো যুদ্ধে না জড়ানো দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান লক্ষ্য। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান আর্মির লক্ষ্য ভারতের সমস্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে সর্বত্র হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জন করা। 

পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর শক্তিশালী শাখা হলো তাদের বিমান বাহিনী।  গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্য অনুসারে, পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে মোট বিমানের সংখ্যা ১ হাজার ৩৮৭টি।  যুদ্ধবিমান রয়েছে ৩৫৭টি। ডেডিকেটেড অ্যাটাক ৯০টি। সামরিক পরিবহন বিমান ৫৪টি।  প্রশিক্ষণ বিমান ৫৫১টি। এরিয়েল রিফুয়েলিং ট্যাঙ্কার ৪টি। স্পেশাল মিশন ২৪টি।  হেলিকপ্টার ৩০৭টি।  অ্যাটাক হেলিকপ্টার ৫৭টি। 

মুসলিম বিশ্বে সবচেয়ে বড় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের। অপর দিকে বিশ্বে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর অবস্থান সপ্তম। পাকিস্তানের হাতে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি  ৮৫টি এফ-১৬ ফ্যালকন জঙ্গি  বিমান । আকাশ প্রতিরক্ষা আর আকাশে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে এ বিমান এখনো বিশ্বজুড়ে আলোচিত শক্তিশালী এক যুদ্ধবিমান। 

বর্তমানে পাকিস্তানের কাছে ১৩৮টি চেংদু জেএফ-১৭ বহুমুখী যুদ্ধবিমান রয়েছে। এ ছাড়া চেংদু জে-১০ মাল্টি রোল ফাইটার জেট রয়েছে ২৫টি।  পাকিস্তানের কাছে ফ্রান্সের তৈরি ১৩৫টি মিরেজ-৩, ১৪৫টি মিরেজ-৫ এবং চীনের তৈরি ১৮০টি এফ-৭পি যুদ্ধবিমান রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ১৮টি সি-১৩০ হারকিউলিস, রাশিয়ার তৈরি ৪টি ইলিউসিন স্ট্রাটেজিক এয়ার লিফটার ছাড়াও আরো অনেক ভারী সামরিক বিমান রয়েছে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে। 

পাকিস্তানের কাছে বর্তমানে ট্যাঙ্ক রয়েছে ২ হাজার ৮২৪টি। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল  ২ হাজার ২০০টি। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের সাজোয়া যান ৯ হাজার ৯৫০টি। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৩৩০টি। বর্তমানে সেলফ প্রপেল্ড আর্টিলারি রয়েছে ৮৬৯টি। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল ৪৪৯টি। বর্তমানে টাউড আর্টিলারি রয়েছে ১ হাজর ২০৮টি। ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২২৬টি। রকেট প্রজেক্টরস রয়েছে ৫৬০টি। ২০২০ সালে রকেট প্রজেক্টরস ছিল মাত্র ১০০টি।

এবার দেখা যাক পাকিস্তান নৌবাহিনীর চিত্র। বর্তমানে পাকিস্তানের মোট রণতরীর সংখ্যা ১১৪টি। ২০২০ সালে পাকিস্তানের কাছে কোন ডেস্ট্রয়ার ছিল না। বর্তমানে পাকিস্তান নেভিতে যুক্ত হয়েছে বিধ্বংসী ২টি ডেস্ট্রয়ার। তবে ২০২০ সালের তুলনায় পাকিস্তান নেভির ফ্রিগেট সংখ্যা ৩টি কমে বর্তমানে ৬টিতে দাড়িয়েছে। করভেটস আছে ২টি। ২০২০ সালের তুলনায় সাবমেরিন ১টি বেড়ে বর্তমানে ৯টিতে পরিণত হয়েছে। ২ বছরের কম সময়ে টহল জাহাজের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ২০২০ সালের মে মাস পর্যন্ত  টহল জাহাজ ছিল মাত্র ১২টি। বর্তমানে এ সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪৮টি। মাইন ওয়ারফেয়ার রয়েছে ৩টি। 

বিশ্বে অল্প কয়েকটি দেশ পারমাণবিক বোমার অধিকারী। পাকিস্তান তার মধ্যে একটি। মুসলিম বিশ্বে একমাত্র দেশ পাকিস্তানের হাতে রয়েছে এ বোমা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তান ভারতের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর ১৯৭২ সালে পাকিস্তান পারমাণবিক কর্মসূচী হাতে নেয়। ভারতের পারমাণবিক পরীক্ষার জবাবে ১৯৯৮ সালের ২৮ মে পাকিস্তান সফলভাবে পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালায়। এর মাধ্যমে বিশ্বে সপ্তম পারমাণবিক বোমার দেশে পরিণত হয়।

বিশ্লেষকদের মতে এ বোমা পাকিস্তানকে টিকে থাকার শক্তি যুগিয়েছে শত্রুর বিরুদ্ধে। স্টকহোম পিস রিসার্স ইনস্টিটিউট এর তথ্য অনুসারে পাকিস্তানের হাতে  ১৪০ থেকে ১৫০টি  পারমাণবিক বোমা মজুদ আছে।  পারমাণবিক বোমা বহনের জন্য পাকিস্তানের কাছে রয়েছে নিজস্ব উদ্ভাবিত বিভিন্ন ধরনের শক্তিশালী মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্র। এসব মিসাইলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো  শাহীন-এ১, রাদ-২,  এ-৩ রকেট এবং ক্রূজ মিসাইল ও ব্যালিস্টিক মিসাইল।

২০১১ সালে পাকিস্তান টেকটিক্যাল নিউক্লিয়ার উইপন ক্যাপাবিলিটি অর্জন করে। এর মাধ্যমে সে বিভিন্ন ক্ষমতার পারমাণবিক বোমা বিভিন্ন পাল্লার ক্ষেপনাস্ত্রের মাধ্যমে ছুড়তে পারে। অর্থাৎ টার্গেট অনুযায়ী স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘ পাল্লার মিসাইল ব্যবহার করতে পারবে পারমাণবিক বোমা হামলার জন্য। এর লক্ষ্য ভারতের সাথে স্বল্প মাত্রার পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি  মোকাবেলা। 

পাকিস্তান তাদের অস্ত্রাগারে বিপুল পরিমাণ মিসাইলের মজুদ গড়ে তুলছে। এটি পাকিস্তানের অন্যতম প্রতিরক্ষা কৌশল। ভারতের যে কোনো প্রান্তে আঘাত হানতে পারে পাকিস্তানের উদ্ভাবিত বিভিন্ন পাল্লার মিসাইল। পাকিস্তানের সবচেয়ে দূরপাল্লার মিসাইল হলো শাহীন-৩।  এটি ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং এর আওতা ২ হাজার ৭৫০ কিলোমিটার।  দ্বিতীয় দূরপাল্লার মিসাইল হলো  শাহীন-২। এর লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার কিলোমিটার।

পাকিস্তান এখন পর্যন্ত স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ১০ ধরনের  ব্যালিস্টক মিসাইল উদ্ভাবন করেছে।  বাবর ক্রূজ মিসাইল ছাড়া তারা আরো ৪ থেকে ৫ ধরনের বিভিন্ন ক্ষমতার মিসাইল উদ্ভাবন করেছে। পাকিস্তানের  উদ্ভাবিত উল্লেখযোগ্য মিসাইলের মধ্যে রয়েছে আনজা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, বারক এয়ার টু সারফেস মিসাইল, শাহীন, ঘুরি, নাসর, আবাবিল, গজনভী। বাবর ক্রজ মিসাইল  ভূমি ও সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ।

পাকিস্তান নৌবাহিনীর মেরুদণ্ড বলা হয় তাদের সাবমেরিনকে। পাকিস্তানের সাবমেরিনের পারমানবিক বোমা নিক্ষেপের ক্ষমতা রয়েছে বলে মনে করা হয় । ২০০১ সালে তাদের সাবমেরিনকে পারমাণবিক বোমা বহনকারী মিসাইল ছোড়ার পদক্ষেপ নেয়। ক্রজ মিসাইল বাবরের  আওতা ৯০০ কিলোমিটার। এটি প্রচলিত ও পারমাণবিক উভয় ধরনের বোমা বহনে সক্ষম। 

পাকিস্তানের কাছে আগোস্টা-৯০বি ক্লাস সাবমেরিন রয়েছে তিনটি। এর একটি ফ্রান্সে তৈরি। অপর দুটি পাকিস্তানে তৈরি।  এছাড়া ফ্রান্সের তৈরি আগোস্টা-৭০ ক্লাস সাবমেরিন রয়েছে দুটি।  ৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে চীনের কাছ থেকে আরো আটটি সাবমেরিন সংগহ করার পথে রয়েছে পাকিস্তান। ২০২১ সালের নভেম্বরে পাকিস্তান নেভিতে যুক্ত হয় তখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আর শক্তিশালী সারফেস রণতরী। নতুন এ রণতরী চীনের তৈরি  টাইপ ০৫৪ ফ্রিগেট। 

বৃটিশ আমলে উপমহাদেশে ১৬টি অস্ত্র কারাখান তৈরি হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় এর সব কটি পড়ে ভারতের ভাগে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান যখন স্বাধীন হয় তখন তাদের কোনো সমরাস্ত্র শিল্প ছিল না। ছিল না কোনো অস্ত্র উৎপাদনের ক্ষমতা।  দীর্ঘদিন পর্যন্ত পাকিস্তান তাদের সমরাস্ত্রের জন্য যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল থাকে। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেয়। মূলত তারপর থেকেই পাকিস্তান  তাদের নিজস্ব আধুনিক ও শক্তিশালী  সমরাস্ত্র  শিল্প গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের দিকে হাত বাড়ায় চীন।

পাকিস্তান প্রথম তৈরি করে মুশক নামক প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান। মুশকের সফল নির্মাণের পর তারা সুপার মুশক ও কারাকোরাম নামে আধুনিক প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান তৈরি করে। গোপন পারমাণবিক কর্মসূচীর অভিযোগে ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের  ওপর সামরিক ও অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে। এ পদক্ষেপ পাকিস্তানকে অস্ত্র শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে আরো প্রেরণা যোগায়।

১৯৯৯ সালে পাকিস্তান তৈরি করে তাদের প্রথম দুর পাল্লার সাবমেরিন আগোস্টা ৯০বি। ২০০০ সালের শুরুতে চীনের সাথে যৌথভাবে পাকিস্তান উদ্যোগ নেয় জেএফ-১৭ বহুমুখী আধুনিক যুদ্ধ বিমান নির্মাণের। একই সাথে পাকিস্তান চীনের সাথে যৌথভাবে  খালিদ ট্যাঙ্ক তৈরি শুরু করে।  ২০০১ সালে পাকিস্তান  উদ্যোগ নেয় শক্তিশালী যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার ও ট্যাঙ্ক তৈরির। তারা ট্যাঙ্ক ও হেলিকপ্টার রপ্তানিরও উদ্যোগ নেয় তখন। পাকিস্তানের তৈরি  ভারী যুদ্ধাস্ত্রের মধ্যে রয়েছে আল খালিদ ও আল জারার নামে ট্যাঙ্ক। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সাজোয়া যান। পাকিস্তানের নিজস্ব তৈরি আকাশযানের মধ্যে রয়েছে সুপার মুশক ও সাব সাফারি নামের প্রশিক্ষণ বিমান। ফাইটার ড্রোন ছাড়া পাকিস্তানের নিজস্ব উদ্ভাবিত অনেক ধরনের ড্রোন বিমান রয়েছে। 

পাকিস্তানের নিজস্ব তৈরি রণতরীর মধ্যে শক্তিশালী রণতরী হলো এফ২২পি জুলফিকার ক্লাস ফ্রিগেটস। এটি বহুমুখী গাইডেড মিসাইল ফ্রিগেটস। এতে রয়েছে শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। চীনের সাথে যৌথভাবে নির্মিত ইতোমধ্যে চারটি ফিগ্রেটস পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে। আরো দুটি নির্মাণাধীন রয়েছে। চারটি ফ্রিগেটের মধ্যে একটি তৈরি হয়েছে পাকিস্তানে। 

পাকিস্তানে বর্তমানে ২০টি বড় ধরনের সরকারি এবং শতাধিক বেসরকারি সমরাস্ত্র তৈরি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নিজস্ব সমরাস্ত্র উদ্ভাবন আর সমরাস্ত্র শিল্পে উন্নতির কারনে ২০১৬ সালে পাকিস্তান সমরাস্ত্র আমদানি ৯০ ভাগ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়।  জেনস ডিফেন্স নিউজের তথ্যে বলা হয়েছে পাকিস্তান ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে ২১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমরাস্ত্র রফতানি করে। পাকিস্তানের বর্তমান লক্ষ্য নিজেদের প্রয়োজনীয় সমরাস্ত্র দেশেই তৈরি করা এবং সমরাস্ত্র রপ্তানি করা। পাকিস্তান ইতোমধ্যে একাধিক দেশে বিক্রি করেছে চেংদু জেএফ-১৭ ফাইটার জেট ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also

উত্তেজনার মধ্যে আবার মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাচ্ছেন ব্লিঙ্কেন

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আজ বৃহস্পতিবার নতুন করে মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু …